আজ সোমবার সকাল ৮:১৮, ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
বর্তমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, স্থিতিশীলতা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। গতকাল সোমবার সারা দেশের ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের সম্মেলনে দেওয়া অভিভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।
সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সম্মেলনের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঁইয়া। এ সময় আরও বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ।
হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশহাসিনার বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘জেলা আদালত এবং জেলা প্রশাসনের কাজ আলাদা, কিন্তু উদ্দেশ্য এক। নাগরিকদের অধিকার সমুন্নত রাখা, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা প্রত্যেকেরই দায়িত্ব। আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন ও দ্রুত কার্যকর করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা, পদ্ধতিগত দুর্বলতা দূর করা এবং দ্রুত রায় পৌঁছাতে পারলে মামলাজট কমবে, যা জনগণের আস্থা বাড়াতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘কখনো কখনো এখতিয়ার, ব্যাখ্যা বা প্রশাসনিক বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দিতে পারে; কিন্তু এটা কাম্য নয়। প্রতিযোগিতা না করে আলোচনা করে সমাধান করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে যশোরের জেলা প্রশাসক আযহারুল ইসলাম বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের মতো জেলা আদালতের ধার্য তারিখ ও আদেশ-রায় জেলা ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করা যেতে পারে। দেশের সব আদালতের রায় ওয়েবসাইটে প্রদানপূর্বক রায় বাস্তবায়নের সময় বা শর্ত ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করলে তা রায় বাস্তবায়নকে সহজ করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। আদালতের চাহিদামাফিক তদন্ত পরিচালনা করার ক্ষেত্রে যাতে নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তারা যথাযথভাবে তদন্ত পরিচালনা করতে পারেন, সে লক্ষ্যে উভয় বিভাগের কর্মকর্তাদের যৌথ প্রশিক্ষণের দাবি জানান তিনি।’
অনুষ্ঠানে নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন বলেন, ‘জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা বা আদেশগুলো জেলা প্রশাসকেরা যাতে সরাসরি পেতে পারেন, সে লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। বিশেষ করে আদালত অবমাননার আদেশ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপিল করতে হবে—এমন মামলার আদেশগুলো যথাসময়ে পাওয়া না গেলে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা যায় না। এ ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশনা, আদেশ ও জরুরি নোটিশ দ্রুত প্রেরণ ও গ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য একটি নির্দিষ্ট অনলাইন পোর্টাল বা ই-হটলাইন তৈরি করা যেতে পারে। এ সময় বিচারপ্রার্থীদের হয়রানি লাঘব ও তাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিতকরণের জন্য জেলা পর্যায়ে বিচারক, প্রশাসন এবং আইনজীবীদের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জানান তিনি।’
সিলেটের জেলা প্রশাসক খান মো. রেজা উন নবী বলেন, ‘আদালতে মামলাজট কমাতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি আরও কার্যকর করা যেতে পারে। মাঠ প্রশাসন ও বিচার বিভাগের মধ্যে আন্তসম্পর্ক উন্নয়ন দেশের স্থিতিশীলতা ও জনগণের ন্যায়বিচারপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিতকরণে অপরিসীম ভূমিকা রাখবে বলে আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি। আমরা আশা করি, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে জনগণ আরও দ্রুত ন্যায়বিচারপ্রাপ্ত হবে এবং আইনের শাসন আরও সুদৃঢ় হবে।’