আজ রবিবার বিকাল ৪:৪৭, ২৩শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
যে কোনো সময় যে কোনো দোয়া পড়া যায়। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রসুল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের দোয়া শিখিয়েছেন। এমনকি ছোট থেকে ছোট বিষয়েরও দোয়া শিখিয়েছেন। আর শুধু একটি দিবসে নয়, মা বাবার জন্য দোয়া করুন সবসময়। দোয়া একটি স্বতন্ত্র ইবাদত।
আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক মুমিনকে ধৈর্যধারণের উপদেশ দিয়েছেন। বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। (সুরা বাকারাহ, আয়াত, ১৫৩)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ মুমিনদের উদ্দেশে আরও বলেছেন, ‘সুতরাং কষ্টের সঙ্গেই তো স্বস্তি আছে, নিশ্চয় কষ্টের সঙ্গেই স্বস্তি আছে।’ ( সুরা আল-ইনশিরাহ, আয়াত, ৫-৬)
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত আছে, রসুল সা. সকাল-সন্ধ্যার কখনো নিম্নোক্ত এসব দোয়া পড়া বাদ দিতেন না।
اللهم إني أسألك العافية في ديني ودنياي وأهلي ومالي، اللهم استر عوراتي وآمن روعاتي واحفظني من بين يدي ومن خلفي وعن يميني وعن شمالي ومن فوقي، وأعوذ بعظمتك أن أغتال من تحتي
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়াতা ফি দ্বীনি ওয়া দুনইয়া-য়া, ওয়া আহলি ওয়ামালি; আল্লাহুম্মাসতুর আওরাতি, ওয়ামিন রাওআতি; আল্লাহুম্মাহফাজনি মিন বাইনি ইয়াদাইয়া ওয়া মিন খালফি, ওয়ান ইয়ামিনি ওয়ান শিমালি ওয়া মিন ফাওকি; ওয়া আউজুবিকা বিআজমাতিকা আন আগতালা মিন তাহতি।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আমার দ্বীন-দুনিয়া, পরিবার ও ধন-সম্পদের নিরাপত্তা কামনা করছি। হে আল্লাহ! আমার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখুন, আমার সৌন্দর্যগুলো নিরাপদ রাখুন। হে আল্লাহ আমাকে আমার সামনে-পেছনে, আমার ডানে-বামে ও ওপরের দিক থেকে রক্ষা করুন। আমি আপনার কাছে আপনার মহত্ত্বের অসিলায়— আমার নিচ দিকে গুম হয়ে যাওয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (নাসায়ি, হাদিস : ৫৫৩০; আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৭৪; ইবনু মাজাহ, হাদিস : ৩৮৭১)
সব ধরণের বিপদ থেকে মুক্তি পেতে সহজ আরো কিছু দোয়া রয়েছে
لَا إِلهَ إِلَّا اللّهُ وَحْدَه لَا شَرِيكَ لَه لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِيْ وَيُمِيْتُ وَهُوَ عَلى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শরিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ইয়ুহয়ি ওয়া ইয়ামুতু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি এক, তার কোনো শরিক নেই, সার্বভৌমত্ব তারই, সব প্রশংসা তারই জন্য, তিনিই জীবন ও মৃত্যু দান করেন আর তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। -সুনানে তিরমিজি
রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, প্রত্যেক দিন সকালে ও সন্ধ্যায় তিনবার করে এই দোয়াটি পাঠ করলে কোনো কিছুই কারো ক্ষতি করতে পারবে না: বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মায়াসমিহি শাইয়ুন ফিল আরদি, ওয়ালা ফিস-সামায়ি ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম।’
অর্থ: ‘আল্লাহর নামের বরকতে আসমান ও জমিনের কোনো কিছুই কোনো ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ। (তিরমিজি ও আবু দাউদ)
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সা. বলেছেন,
তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়ে থাকে। যদি সে তাড়াহুড়া না করে আর বলে যে, আমি দোয়া করলাম, কিন্তু আমার দোয়া তো কবুল হলো না। (বুখারি ৬৩৪০)
হাদিসে এসেছে, হযরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোনো ব্যক্তি (আল্লাহর কাছে) কোনো কিছু প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা তাকে তা দান করেন। অথবা তদানুযায়ী তার থেকে কোনো অমঙ্গল প্রতিহত করেন। যতক্ষণ না সে কোনো পাপাচারে লিপ্ত হয় বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দোয়া করে। (তিরমিজি)
রসুল সা. বলেছেন, যদি কেউ চায় যে বিপদের সময় তার দোয়া কবুল হোক, তাহলে সে যেন সুখের দিনগুলোতে বেশি বেশি দোয়া করে। (তিরমিজি ৩৩৮২)
হযরত সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দোয়া ছাড়া আর কিছুই তাকদির পরিবর্তন করতে পারে না আর নেক আমল ছাড়া আর কিছুই বয়সে বৃদ্ধি ঘটায় না। (সহিহাহ ১৫৪, তিরমিজি ২১৩৯)