আজ রবিবার রাত ১০:১২, ১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম হলো রোজা। এটি শুধু একটি ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং আত্মশুদ্ধি, ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণের এক অনন্য উপায়।
রোজা শুধু উপবাস থাকার নাম নয়, বরং এটি আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিক্ষা দেয়। আসুন, জেনে নেওয়া যাক রোজার মাধ্যমে আমরা কী কী শিক্ষা লাভ করি।
আত্মসংযম ও ধৈর্যের শিক্ষা
রোজা মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বাড়ায়। সারাদিন ক্ষুধা ও তৃষ্ণা সহ্য করেও একজন রোজাদার খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত থাকে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। এটি ধৈর্যশীল হতে শেখায় এবং ইচ্ছাশক্তি শক্তিশালী করে।
সহানুভূতি ও দানের শিক্ষা
রোজার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি দরিদ্র ও অভাবী মানুষের কষ্ট। সারাদিন না খেয়ে থাকার ফলে আমরা অনুভব করি ক্ষুধার যন্ত্রণা, যা আমাদের দানশীল ও সহানুভূতিশীল হতে উদ্বুদ্ধ করে।
আত্মশুদ্ধি ও পাপ থেকে দূরে থাকার শিক্ষা
রোজা শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকার জন্য নয়, বরং সকল প্রকার অন্যায় ও গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকার অনুশীলন। রাসূল (সা.) বলেছেন, “যদি কেউ মিথ্যা কথা বলা ও খারাপ কাজ ত্যাগ না করে, তবে তার না খেয়ে থাকার কোনো মূল্য নেই।” (বুখারি)
আল্লাহভীতি ও তাকওয়া অর্জনের শিক্ষা
কুরআনে বলা হয়েছে, “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।” (সুরা বাকারা: ১৮৩)
সুস্থতা ও পরিচ্ছন্নতার শিক্ষা
রোজার স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও অসংখ্য। এটি দেহের বিপাকীয় প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে, হজমতন্ত্রকে বিশ্রাম দেয় এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
সময়ের গুরুত্ব ও শৃঙ্খলার শিক্ষা
রমজান মাসে মুসলমানরা সেহরি, নামাজ, ইফতারসহ প্রতিটি কাজ নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করে, যা সময়ানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলার শিক্ষা দেয়। এই অভ্যাস আমাদের জীবনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে।
পারস্পরিক ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা
রমজান মাসে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ একসঙ্গে রোজা রাখে, ইফতার করে এবং এক কাতারে নামাজ আদায় করে। এতে পারস্পরিক ভালোবাসা, ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ বৃদ্ধি পায়।
রোজা শুধু একটি ধর্মীয় অনুশাসন নয়, বরং এটি আমাদের নৈতিক, আত্মিক ও শারীরিক উৎকর্ষ সাধনের একটি মাধ্যম। এটি আমাদের ধৈর্যশীল, সংযমী, দানশীল ও সুশৃঙ্খল হতে শেখায়।