আজ রবিবার রাত ৯:৫০, ২৩শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

শিরোনাম
◈ এই বাজার আমার নেতৃত্বে চলবে, রামদা হাতে যুবদল নেতা ◈ গণভবনে পাওয়া মেডিকেল রেকর্ডে হাসিনার শারীরিক অবস্থার যে গোপন তথ্য জানা গেল! ◈ এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ওপরে রাখার অনুরোধ ◈ আহতদের দেখতে গিয়ে হাসিনা বলেছিলেন ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’ ◈ বাংলাদেশকেই ঠিক করতে হবে তারা কেমন সম্পর্ক চায়: জয়শঙ্কর ◈ এবার বাধ্যতামূলক অবসরে ৪ ডিআইজি ◈ পাকিস্তানের পরিকল্পনায় বর্ডারে ফেঁসে যাচ্ছে ভারত! ◈ নুসরাতের জবানবন্দির ভিডিও ফাঁস, সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের মামলা প্রত্যাহারের আবেদন ◈ এবার ডেভিল হান্টে ধরা পড়লো চোর ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি ◈ মানুষ খুন নিয়ে ধর্মে কী বলা আছে, সেই কাগজ পাওয়া গেছে হাসিনার রুমে!

পঞ্চম দিনেই হোঁচট খেল গোলাপি বাস

নিউজ ডেস্ক |দুরন্ত নিউজ .কম
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫ , ১:১০ অপরাহ্ণ
ক্যাটাগরি : কর্পোরেট

রাজধানীতে গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মাধ্যমে চালু করা হয় ই-টিকেটিং পদ্ধতি ও কাউন্টারভিত্তিক বাস সার্ভিস। নতুন পদ্ধতিতে গাজীপুর-ঢাকা সড়কের বিভিন্ন রুটে প্রথম অবস্থায় ২১টি কোম্পানির ২৬১০টি বাস চালু করা হয়। সব গাড়ির রঙ নির্ধারণ করা হয় গোলাপি। নতুন এ সিস্টেমের পাঁচ দিন যেতে না যেতে এসব গাড়ির শ্রমিকদের ভেতর অসন্তোষ শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার বেশ কিছু জায়গায় বন্ধ হয়ে যায় এই কাউন্টারভিত্তিক বাস।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সড়কে যানজট নিরসন ও শৃঙ্খলা আনতে ওই পদ্ধতি চালু করে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। নিয়ম অনুযায়ী, এসব বাসে যাতায়াতে আগে নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকিট কিনতে হবে। গোলাপি রঙের এসব বাসে টিকিট ছাড়া কেউ উঠতে পারবেন না, যত্রতত্র বাসে ওঠা-নামাও করা যাবে না। শুরুটা আব্দুল্লাহপুর থেকে শুরু হলেও চলতি মাসে মিরপুর, গাবতলী, মোহাম্মদপুর এলাকায় যাতায়াত করা অন্যান্য রুটের বাসগুলোতেও কাউন্টার ও ই-টিকেটিং পদ্ধতি চালু করার কথা রয়েছে।

গতকাল সরেজমিন রাজধানীর প্রগতি সরণি, সায়েদাবাদ, সদরঘাট, গুলিস্তানসহ বেশ কিছু জায়গায় গোলাপি বাসগুলো বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। তবে সায়েদাবাদ এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। পরিবহন শ্রমিকরা দেশ রূপান্তরের কাছে দাবি করছেন, নতুন টিকিট পদ্ধতিতে তাদের ক্ষতি হচ্ছে। সারা দিন গাড়ি চালিয়ে আগের মতো টাকা পাচ্ছেন না তারা। যদিও রবিবার রাতেই মালিক সমিতির সঙ্গে এ নিয়ে মিটিং হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার বিষয়ে সিদ্ধান্তও হয়। তবে আশানুরূপ সমাধান না হওয়ায় পরিবহন শ্রমিকরা গাড়ি চালাচ্ছেন না।

তুরাগ পরিবহনের এক চালক বাশার মিয়া বলেন, সারা দিন গাড়ি চালিয়ে রাত ২টায় যেতে হয় টাকা আনতে কাউন্টারে। সেখানে গিয়ে টাকার জন্য আরও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা। আগে যে টাকা পেতাম তার থেকে কম টাকা নিতে হচ্ছে। এভাবে চললে আমাদের সংসার চলবে কীভাবে। আমরা নতুন নিয়মে গাড়ি চালাতে চাই না।

এ কোম্পানির আরেক চালক মো. শাহজাহান বলেন, পুরো সিস্টেম ঠিক করে তারপর এ সেবা চালু করার দরকার ছিল। হুটহাট করে চালু হওয়ায় অনেক কিছুই এখন এলোমেলো লাগছে। যার জন্য আমরা বিক্ষোভ করেছি। আর গাড়ি চালিয়ে যদি চলার মতো টাকাই দিন শেষে না পাওয়া যায়, তাহলে এ সিস্টেমে গাড়ি চালিয়ে আমাদের লাভটা কী?

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, পরিবহনের সঠিক ব্যবস্থপনা না করে হুটহাট একের পর এক নিয়মে গাড়ি চালালে সমস্যা তো হবেই। আর এ সমস্যার জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় যাত্রীরা। যার জন্য বাস বন্ধ থাকায় বিভিন্ন জায়গায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের। তাছাড়া নতুন নিয়মে পরিবহন শ্রমিকদের আগের মতো টাকা পাচ্ছে না। তাদের বিষয়গুলো সমাধান হওয়া উচিত। তাই আমরা চাই সঠিক ব্যবস্থাপনায় গাড়ি চলুক।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম গতকাল রাতে  বলেন, বাস মালিকদের সঙ্গে আমাদের রাতে বৈঠক হয়েছে। আগামীকাল (আজ) সব জায়গায় ঠিকভাবে গাড়ি চলাচল করবে। মূলত একটি পক্ষ দাঁড়িয়েছে যারা সুশৃঙ্খল একটি পদ্ধতি তারা মেনে নিতে পারছে না। তবে আগামী সপ্তাহের মধ্যে আমরা বিআরটিএ চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসে নীতিমালা ঠিক করব।

এদিকে বাস বন্ধ থাকায় ভোগান্তির শিকার যাত্রীরা বলছেন, সিস্টেম যাই হোক না, সেটা যাত্রীদের কল্যাণের বিষয়টি যেমন থাকবে তেমনি শ্রমিকদের দিকটিও দেখতে হবে। এটা নিয়ে মালিক-শ্রমিক বিরোধ হলে যাত্রীদেরই বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়।

গতকাল প্রগতি সরণিতে মো. জামান নামে এক যাত্রী বলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে বাস পাওয়া যাচ্ছে না। আগে প্রতি ৫ মিনিট পরপর গাড়ি পাওয়া যেত। কিন্তু এখন শ্রমিকদের ঝামেলার জন্য বাস পাওয়া যাচ্ছে না।

সায়েদাবাদ এলাকায় পরিবহন শ্রমিকদের বিক্ষোভে গাজীপুর রুটে চলা তুরাগ পরিবহনের সব বাস দুপুরের দিকে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন আসমা বেগম নামে এক যাত্রী। তিনি বলেন, সায়েদাবাদ আসলাম গাজীপুর যাওয়ার জন্য। এখানে এসে দেখি সব বাস বন্ধ করে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছেন। কদিন পরপর এসব ঝামেলার জন্য আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। হুটহাট না করে সবার জন্য ভালো হয় এমন ব্যবস্থা করা উচিত।