আজ সোমবার রাত ১:০২, ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

আত্মবিশ্বাসী সন্তান গড়ে তুলতে অভিভাবকদের ৭টি কার্যকরী আচরণ!

নিউজ ডেস্ক |দুরন্ত নিউজ .কম
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৫ , ১০:৩১ অপরাহ্ণ
ক্যাটাগরি : লাইফস্টাইল

আত্মবিশ্বাস একটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ, যা একজন বাবা-মায়ের পক্ষে তাদের সন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় উপহারগুলোর মধ্যে একটি। সবারই আকাঙ্ক্ষা থাকে, তাদের সন্তানরা নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখুক, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে শিখুক এবং শক্তিশালী, আত্মবিশ্বাসী প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে গড়ে উঠুক। কিন্তু, প্রশ্ন থাকে, কীভাবে এমন সন্তান লালন-পালন করা সম্ভব যারা নিজেদের সম্পর্কে নিরাপদ?

মনোবিজ্ঞানীরা বহু বছর ধরে মানুষের আচরণ, সম্পর্ক এবং ব্যক্তিগত উন্নতির উপর গবেষণা করেছেন। তারা বলেন, আত্মবিশ্বাসী শিশুরা স্রেফ জন্ম থেকেই আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে না,তাদের বাবা-মায়ের প্রতিদিনের আচরণই তাদের আত্মবিশ্বাসের ভিত্তি তৈরি করে।

মনোবিজ্ঞান আমাদের বলে দেয়, কী ধরনের আচরণ শিশুদের মধ্যে আত্মসম্মান এবং মানসিক দৃঢ়তা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এখানে এমন সাতটি অভিভাবকীয় আচরণ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে, যা সন্তানের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে।

তারা সন্তানদের ভুল করতে দেয়

অভিভাবক হিসেবে অনেকেই সন্তানের ভুল থেকে রক্ষা করতে চান, কিন্তু মনে রাখতে হবে, আত্মবিশ্বাসী শিশুরা সেইসব শিশুরা নয় যারা কখনো ভুল করে না, বরং যারা ভুল থেকে শিখতে পারে। মনোবিজ্ঞান বলে, যখন সন্তানদের তাদের ভুল থেকে শিখতে এবং আবার চেষ্টা করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়, তখন তারা মানসিক দৃঢ়তা এবং আত্মবিশ্বাস অর্জন করে। যখন অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সমস্যা সমাধানে হস্তক্ষেপ না করে, তখন শিশুটি নিজের সক্ষমতার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে শিখে।

তারা প্রচেষ্টা, শুধু ফলাফল নয়, প্রশংসা করেন

অভিভাবকরা যখন তাদের সন্তানদের প্রচেষ্টা এবং পরিশ্রমকে প্রশংসা করেন, তারা তাদের আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে সাহায্য করেন। মনোবিজ্ঞানী ক্যারল ডুইক বলেন, “গ্রোথ মাইন্ডসেট” তৈরি হওয়া দরকার, যেখানে কেবল ফলাফল নয়, চেষ্টা এবং পরিশ্রমের গুরুত্ব শেখানো হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা কেবল তাদের প্রচেষ্টার জন্য প্রশংসিত হয়, তারা ভবিষ্যতে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ গ্রহণে আগ্রহী হয়।

তারা সন্তানদের মতামত প্রকাশ করতে শেখায়

একটি আত্মবিশ্বাসী শিশুকে গড়ে তোলার জন্য তাদের মতামত প্রকাশ করার সুযোগ দিতে হয়। যেসব সন্তান নিজেদের কথা বলতে শিখে, তারা নিজেদের প্রতি আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়। যখন অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের মতামত শোনেন এবং তা মূল্যায়ন করেন, তখন তারা তাদের কণ্ঠস্বর এবং চিন্তা প্রকাশ করার জন্য অনুপ্রাণিত হয়।

তারা সন্তানদের দায়িত্বশীলতা দেয়

বাড়ির কাজ এবং দায়িত্ব নিয়ে শিশুকে তাদের ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন করে তোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ছোটবেলায় যারা বাড়ির কাজে সাহায্য করেছে, তারা বড় হয়ে আরও দায়িত্বশীল এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। এই অভ্যাস তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এবং পরিশ্রমের মূল্য বুঝতে সাহায্য করে।

তারা সন্তানের সমস্যার সমাধানে সাহায্য করেন, তবে না গিয়ে, তাদেরকে সাহায্য করতে উৎসাহিত করেন

যতবার অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সব সমস্যা সমাধান করতে এগিয়ে যান, ততবার তারা অজান্তেই তাদের সন্তানদের আত্মবিশ্বাস নষ্ট করতে পারেন। এর বদলে, তাদের সাহায্য করতে হবে, কিন্তু তাদের নিজেদের সমস্যা সমাধান করার সুযোগ দিতে হবে।

এভাবে, যদি অভিভাবকরা এই আচরণগুলো অনুসরণ করেন, তবে তারা তাদের সন্তানের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক দৃঢ়তা গড়ে তুলতে সক্ষম হতে পারেন।