আজ সোমবার রাত ২:২৭, ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
কিশোরগঞ্জের হাওড় উপজেলা মিঠামইনে সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের বহুল আলোচিত শতকোটি টাকার ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’ এখন জনমানবহীন। অথচ কয়েক মাস আগেও ওই রিসোর্টের কক্ষ বুকিং করতে কয়েক সপ্তাহ আগে যোগাযোগ করতে হতো। গেল বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর বন্ধ হয়ে যায় রিসোর্টের সব কপাট। পতন হয় প্রেসিডেন্ট রিসোর্টের জৌলুসেরও। এদিকে রিসোর্টের জন্য ভয় দেখিয়ে, জোরপূর্বক নেওয়া জমির দাম এখনো পাননি অনেকে।
কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার দুর্গম হোসেনপুর গ্রামে সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ শত কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তুলেছেন প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট। ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রিসোর্টটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ছেলে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক।
রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন সময়ে রিসোর্টটি পরিদর্শন করেছেন আব্দুল হামিদও। এখানে চলত হারুনের রাম রাজত্ব। ৩০ একর জমি নিয়ে গড়ে তোলা তিন তারকা মানের রিসোর্টে মন্ত্রী-এমপি, সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র তারকারা যখন তখন ছুটে আসতেন।
গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর পালিয়ে যান গোয়েন্দা পুলিশের আলোচিত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ। এলাকা ছেড়ে চলে যান রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তার ছোট ভাই শাহরিয়ার কবির। অভিযোগ আছে, পুলিশের চাকরির সুবাদে প্রভাব বিস্তার করে মানুষের জমি দখল করে হারুন এ রিসোর্ট গড়েছেন । এলাকায় তার স্বজনদের নামেই কিনেছেন প্রায় একশ একর জমি। এছাড়া, এলাকার অসংখ্য মানুষের শতাধিক একর জমি দখল করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এক সময়ে হারুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। সারদায় ট্রেনিংয়ের সময় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে চাকরিচ্যুত হন তিনি। পরে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এলে হারুন পুলিশের চাকরি ফিরে পান এবং তাদের আর্শীবাদে বনে গেছে অঢেল সম্পদের মালিক।
এদিকে, গেল বছরের ৯ ডিসেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একটি দল হারুনের বিলাসবহুল এই রিসোর্টে অভিযান চালায় বলে জানায় এনবিআর এর পরিচালক চাঁদ সুলতানা চৌধুরাণী। অভিযানে ৪টি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ও বেশকিছু নথিপত্র জব্দ করা হয়।
এদিকে রিসোর্টের জন্য ভয় দেখিয়ে, জোরপূর্বক নেওয়া জমির দাম এখনো অনেকে পাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।