আজ শনিবার দুপুর ১:১৮, ২৪শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৬শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
শনিবার (৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।
এ সময় রুহুল কবির রিজভীর পাশে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদসহ বিএনপির নারী নেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে বিএনপি নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, উন্নয়ন এবং শোষণ ও নির্যাতন থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। বিএনপি বিশ্বাস করে, একটি নারীবান্ধব, নিরাপদ ও স্বাধীন সমাজ গড়ে তোলা প্রয়োজন। সেই সমাজে নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার, সুরক্ষা ও মর্যাদা ভোগ করবেন।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আমরা যখন নারীর ক্ষমতায়ন, নিরাপত্তা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার কথা বলছি, তখন বাস্তবতা অত্যন্ত হতাশাজনক। সম্প্রতি দেশজুড়ে নারীদের প্রতি সহিংসতা, বৈষম্য ও অত্যাচারের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। সমাজে নারীদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য এখনো অনেক কাজ বাকি আছে।’
নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য ও নারীদের প্রতি সহিংসতা দিন দিন তীব্রতর হচ্ছে, যা আমাদের জাতির জন্য উদ্বেগের বলে মন্তব্য করেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘এই কঠিন বাস্তবতায় বিএনপি দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, নারীদের নিরাপত্তা, মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে এবং শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, ‘দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে নারীরা যেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, ঠিক তেমনি অনলাইনেও তারা বিরূপ আচরণের শিকার হচ্ছেন। রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রী, নারী শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার নারীদের ইভটিজিং, শ্লীলতাহানি ও হেনস্তা করা হচ্ছে। ধর্ষণ ও নির্যাতন করে নারীদের হত্যা করা হচ্ছে।’
একের পর এক নারীকে হেনস্তা ও আক্রমণ এবং সামগ্রিক বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি গড়ে উঠছে, তা রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা ও সম্প্রীতির জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও মনে করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সামাজিক অবক্ষয়ের মাধ্যমে কেন আজ নারীদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং এর পেছনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না, সেটা যাচাই করা প্রয়োজন।
রিজভী বলেন, এই অসভ্যতা ও সহিংসতার পেছনে কোনো উগ্র গোষ্ঠীর উসকানি বা মদদ থাকতে পারে। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করে ফায়দা লোটার অপচেষ্টা করছে এবং তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে একটি অতিরক্ষণশীল রাষ্ট্র বানানো, যেন নারীরা নিজ দেশে অধিকারহীন হয়ে পড়েন।
রিজভীর ভাষ্য, অতীতের মতো ভবিষ্যতেও দেশের নারীরা সব সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। তাদের শক্তি, সাহস ও অবদান দেশের উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আর নারীদের সেই ক্ষমতায়নের রাজনৈতিক পাথেয় হিসেবে সব সময় পাশে থাকবে বিএনপি।