আজ সোমবার রাত ২:০৬, ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
ছোট পর্দার অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। অল্পদিনেই ভক্ত-অনুরাগীদের মনে বিশেষ ভাবে জায়গা করে নিয়েছেন। দর্শকমহলে নিজের অভিনয় দক্ষতার কারণে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন। নাটকের পাশাপাশি তিনি বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
সম্প্রতি নেদারল্যান্ড গিয়েছেন অভিনেত্রী। গতকাল ঢাকায় ফিরেছেন। রটারড্যাম চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র ‘কাজল রেখা’। ভালোবাসা দিবসে মুক্তি পাবে তাঁর অভিনীত বেশ কয়েকটি নাটক।
সাদিয়া আয়মানের প্রথম চলচ্চিত্র ‘কাজল রেখা’ রটারড্যাম চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে। ছবির টিমের সঙ্গে হাজির হয়েছিলেন তিনিও। ৫ ফেব্রুয়ারি প্রদর্শনীর দিনে উপস্থিত ছিলেন হল রুমে।
শত শত দর্শকের মাঝে নতুন এক অভিজ্ঞতা সঞ্চার করেছেন সাদিয়া। বলেন, ‘আমি জীবনে এত বড় স্ক্রিন দেখিনি। সেই সঙ্গে সাউন্ড সিস্টেম ও দর্শকের নীরবতা—আমাকে যেন অন্য জগতে নিয়ে গিয়েছিল। একে তো আমার প্রথম চলচ্চিত্র, তার ওপর প্রথম কোনো উৎসবে হাজির হওয়া, স্টেজে উঠে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করা—সব মিলিয়ে আমি দিনটা ভুলতে পারব না। মনে হচ্ছে, জীবনের সব চেয়ে বড় অর্জন এটা।
একই উৎসবে গিয়েছিলেন জয়া আহসানও। তবে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি সাদিয়ার। বলেন, ‘আমাদের স্ক্রিনিং ছিল ৫ ফেব্রুয়ারি। জয়া আপার ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ ছিল পরের দিন। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দেখা করতে পারিনি। উৎসবে আসলে নানা ধরনের নিয়ম থাকে। আমি ওই দিন হাজির হতে গেলে উৎসব কমিটির কাছ থেকে অনুমতির প্রয়োজন ছিল। সেটা হয়ে ওঠেনি।’
এবার উৎসব শেষ করে বেলজিয়াম ও ফ্রান্সে ঘুরেছেন সাদিয়া। দেশ দুটিতে দারুণ সময় কাটিয়েছেন। গতকালই ঢাকায় ফিরেছেন। বলেন, ‘সকাল ৯টায় ল্যান্ড করেছি। এরপর বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়েই নিকেতন গিয়েছি ডাবিং করতে। ভালোবাসা দিবসে একটি বিজ্ঞাপনচিত্র আসবে। সেটারই কাজ করলাম। বেলজিয়াম ও ফ্রান্সে অনেক কিছু শিখলাম। প্রবাদ আছে, জ্ঞান অর্জনের জন্য সুদূর চীনে যাও। কথাটা মিথ্যা নয়। নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম ও ফ্রান্স আমাকে নতুন এক জগৎ সম্পর্কে ধারণা দিয়েছে। আমরা সব সময় কাজের মধ্যেই জীবন পার করি। নিজেকে আলাদা করে সময় দিই না। দেশগুলোতে দেখলাম, নিজেদের নিয়ে সবাই কত ভাবে! সপ্তাহে অন্তত একটা দিন হলেও তারা পরিবারকে সময় দেয়। কখনো থিয়েটার, কখনো মিউজিয়াম, আবার কখনো সিনেমা হল—আনন্দ ভাগাভাগি করছে সবাই।’
নির্দিষ্ট করে বলতে না পারলেও সাদিয়া জানালেন ভালোবাসা দিবসে অন্তত চার-পাঁচটা নাটক আসবে তাঁর। কোনোটা জুলাই বিপ্লবের আগে শুটিং করা, কোনোটা পরে। তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েকজন পরিচালক জানিয়েছেন, ভালোবাসা দিবসে আমার অভিনীত নাটক আসবে। নেদারল্যান্ডস যাওয়ার আগেই সেগুলোর শুটিং করেছিলাম। তবে সঠিকভাবে বলতে পারছি না সংখ্যাটা কত। ভক্তরা অখুশি হবে না।’
আগে মাসের প্রায় ৩০ দিনই শুটিং করতেন সাদিয়া। জুলাই বিপ্লবের পর কমিয়েছেন। আগে ৫টা নাটক করলে এখন করেন ২টা। আগে ১০টা বিজ্ঞাপন করলে এখন করেন ৫টা। কারণটাও বললেন, ‘আমি ২০২৩ ও ২০২৪ সালে টানা কাজ করেছি। একটা সময় ক্লান্ত মনে হচ্ছিল। নিজের জন্যও কোনো সময় ছিল না। একটা জীবনে আসলে খুব বেশি কাজ দরকার হয় না। ভালো মানের কিছু কাজ করতে পারলেই আজীবন মানুষের মনে বেঁচে থাকা যায়। জুলাই বিপ্লবের সময় বেশ কিছু দিন ঘরে বসেছিলাম। তখনই এই উপলব্ধিটা হয়েছে। এবার বিদেশে গিয়ে বেশি করে বুঝেছি, নিজেকে আগে সময় দিতে হবে।’
হাতে নিয়েছেন চলচ্চিত্র
নতুন একটি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন সাদিয়া। আগেই পরিচালক ও সহশিল্পীর নাম বলতে চান না। মার্চ থেকে শুটিং, এটা জানিয়ে রাখলেন। সাদিয়া বলেন, “অনেকগুলো ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলাম। বেশির ভাগই মসলাদার ছবি। তবে আমার মনে হয়েছে ‘কাজল রেখা’কে ছাড়িয়ে যেতে পারবে এমন ছবিতে অভিনয় করতে হবে। অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে গত ডিসেম্বরে মনের মতো একটা গল্প পেলাম। সব ঠিক থাকলে এ বছরের শেষের দিকে ছবিটি মুক্তি পাবে।”
ওটিটি
একটি ওয়েব সিরিজ করেছিলেন গত বছর। হইচইতে মুক্তি পাবে। ‘জানেন তো, ওটিটিতে আমাদের কিছু বলা নিষেধ থাকে। প্ল্যাটফরমই সময়মতো সব ঘোষণা করে। তবে পরিচালকের কাছে জানতে পারলাম ২০ ফেব্রুয়ারির পর পরই সিরিজটি মুক্তি পাবে’—বললেন সাদিয়া।