আজ বুধবার সকাল ৭:৪৩, ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
রাতের অন্ধকার দূর করতে গ্রামীণ জীবনে একটা সময় মানুষের অন্যতম ভরসা ছিল হারিকেন। জীবন যাত্রার আধুনিকায়ন, তথ্য প্রযুক্তি, বিদ্যুতের সহজলভ্যতা ও জ্বালানি তেল কেরোসিনের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিলুপ্তির পথে এখন গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ‘হারিকেন বাতি’।
মুকসুদপুরের নানা পেশার মানুষের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, অনেকেই পড়ালেখা করেছেন হারিকেনের মৃদু আলোয়। গৃহস্থালি এবং ব্যবসার কাজেও হারিকেনের ব্যাপক চাহিদা ছিল। তবে এখন সেই হারিকেন অত্যন্ত অবহেলাসহ ঠাঁই পেয়েছে জাদুঘরে। হারিকেনের স্থান দখল করেছে নানা ধরনের আধুনিক বৈদ্যুতিক বাতি।
কেবি জামান নামের ৬০ বছরের এক বৃদ্ধ বলেন, আমাদের সময় পড়াশুনার জন্য একমাত্র অবলম্বন ছিল হারিকেন। তাছাড়া, হারিকেন জ্বালিয়ে রাতে হাট-বাজারে যেতাম আমরা। দোকানিরাও বেচাকেনা করত হারিকেনের আলোতে। তবে এখন এলাকায় বিদ্যুতের প্রভাব ও কেরোসিনের দাম বাড়ার কারণে আর হারিকেন ব্যবহার হয় না। তবে আমাদের বাড়িতে ‘তাজ হারিকেন’ নামের একটা হারিকেন এখনও আছে।
বর্তমানে হারিকেনের ব্যবহার নেই বললেই চলে। হারিকেন জাপানি শব্দ হলেও প্রাচীন বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য কুপি বাতি, মোমবাতি ও হারিকেন এখন শুধুই স্মৃতি। গ্রামের অমাবস্যার রাতে মিট-মিট আলো জ্বালিয়ে মানুষের পথ চলার স্মৃতি এখনও তাড়া করে। দিন দিন প্রযুক্তি মানুষকে উন্নত করছে। হারিকেন ছেড়ে মানুষ এখন বিদ্যুতের দিকে ঝুঁকছে।
তাপবিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ, সৌরবিদ্যুৎসহ জ্বালানি খাতে ব্যাপক উন্নয়নে ঐতিহ্যবাহী হারিকেন বিলুপ্তির পথে। এছাড়াও প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎকে সংগ্রহ করে ব্যবহারের পন্থা আবিষ্কার করেছে বিজ্ঞানীরা। চার্জলাইট, সৌরবিদ্যুৎসহ বেশকিছু আলোর জোগান থাকায় এখন আর কেউই ঝুঁকছেন না হারিকেনের দিকে।
প্রবীণদের মতে, এক সময় হারিকেন দেখতে যেতে হবে জাদুঘরে। নতুন প্রজন্ম হয়তো জানবেও না হারিকেন কী বা হারিকেনের ইতিহাস? চায়না জাপানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে খুব দ্রুত চার্জ সংরক্ষণকারী আলোর প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে। এভাবেই হয়ত চিরতরে হারিয়ে যাবে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ‘হারিকেন’।