আজ শনিবার রাত ৩:১৮, ২৪শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৬শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

‘জলে যাচ্ছে’ পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাজার কোটি টাকা!

নিউজ ডেস্ক |দুরন্ত নিউজ .কম
আপডেট : মার্চ ৫, ২০২৫ , ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ
ক্যাটাগরি : বাংলাদেশ

মেঘনার ভাঙন ও জলোচ্ছ্বাস থেকে ভোলার তজুমদ্দিন ও লালমোহন উপজেলাকে রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাজার কোটি টাকার চলমান প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এতে পানি উন্নয়নের টাকা পানিতে ‘ভেসে যাওয়া’র আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
ভোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাজার কোটি টাকার চলমান প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদাররা নিয়ম না মেনে নদীর তীর থেকেই ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে এবং সেই বালুই জিওব্যাগ ভরে কাছাকাছি এলাকায় ডাম্পিং করা হচ্ছে। এতে বাঁধ ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্পটি আরও ঝুঁকিতে পড়ছে।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, তজুমদ্দিনের কাটাখালি স্লুইসগেট এলাকায় মাত্র ১০০ মিটার দূর থেকে ১০-১২টি ড্রেজার দিয়ে দিন-রাত বালু উত্তোলন চলছে। এসব বালু নদীর তীর রক্ষার জন্য জিওব্যাগে ভরে কাছাকাছি ফেলা হচ্ছে, যা ভাঙনের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে।

একইভাবে সোনাপুর, চাঁদপুর স্লুইসগেট, সৈয়দাবাদ ও ফাতেমাবাদ এলাকায়ও অর্ধশতাধিক ড্রেজার দিয়ে নদীর তীর থেকেই বালু তোলা হচ্ছে। এতে করে জিওব্যাগের কার্যকারিতা কমে যাওয়ার পাশাপাশি বাঁধ রক্ষার কাজও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রহিম, রফিকুল ইসলাম, সোলায়মান, হিরণ, শাকিল ও মেহেদি হাসান অভিযোগ করে বলেন, ‘ঠিকাদাররা বেশি মুনাফার লোভে সরকারি টাকা মেঘনার জলে ভাসিয়ে দেয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে।’

ভোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাজার কোটি টাকার চলমান প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সময় সংবাদ
তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাজি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাঁধ নির্মাণের জন্য তীর থেকে বালু উত্তোলন করা হলে নতুন বাঁধ ধসে যাবে। জিওব্যাগে বালুর পরিবর্তে মাটি দেয়া হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি।’

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি না হলেও কয়েকজন শ্রমিক স্বীকার করেছেন যে, তাদের নির্দেশ অনুযায়ী তীর থেকেই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘এভাবে বালু উত্তোলন প্রকল্পের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এক কিলোমিটার দূর থেকে বালু উত্তোলনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং অনিয়ম বন্ধে কঠোর মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

২০২৩ সালে শুরু হওয়া ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার প্রকল্পটি ২০২৫ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৪৮% কাজ শেষ হয়েছে। পুরো কাজ শেষ করতে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।