আজ সোমবার ভোর ৫:০৮, ২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

হঠাৎ হু হু করে বাড়ছে এই নদীর পানি! ঘটনা কী? যে আশঙ্কা

নিউজ ডেস্ক |দুরন্ত নিউজ .কম
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫ , ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ
ক্যাটাগরি : জনপদ

হঠাৎ হু হু করে বাড়ছে এই নদীর পানি! ঘটনা কী? খরা মৌসুমে হঠাৎ তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা পাড়ের কৃষক ও বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

এ সময়ে ভারতের পানি ছেড়ে দেয়ায় তিস্তার পানিপ্রবাহ বেড়ে গেছে, যা আগামী ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তা পাড়ের মানুষের ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচিকে ব্যাহত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তিস্তা পাড়ের মানুষ ন্যায্য পানির হিস্যা আদায়ের দাবিতে এই কর্মসূচির আয়োজন করেছে। পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে লাখ লাখ মানুষের সমাগমের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এতে গ্রামীণ খেলাধুলা ও নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকার কথা রয়েছে। তবে ভারতের পানি ছেড়ে দেয়ায় তিস্তার পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে তিস্তা পাড়ের মানুষের আন্দোলন ও ফসল রক্ষা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ন্যায্য দাবি নস্যাৎ করার ভারতের এমন দায়িত্বহীন আচরণে তৈরি হচ্ছে ভারত বিরোধী মনোভাব।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টার পর থেকে তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিকেল ৬টায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ ৫০ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। তবে পানির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তিস্তা পাড়ের কৃষকরা পানি বৃদ্ধিতে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন। তিস্তার জেগে ওঠা বালুচরে রসুন, পিয়াজ, মিষ্টি কুমড়া, ডাল ও বাদামসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা। কৃষক কদম আলী বলেন, ‘তিস্তার পানি নিয়ে আমরা আন্দোলন করতে যাচ্ছি, ঠিক তখনই ভারত পানি ছেড়েছে। এটা তাদের চাল। এই মৌসুমে সাধারণত ভারত পানি ছাড়ে না।’

আদিতমারীর গোবর্ধন এলাকার সাত্তার মিয়া বলেন, ‘লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণে আমাদের আয়োজনে তিস্তা খননের দাবি জানাবো। এভাবে আর তিস্তার দুঃখ চাই না। এই সময়ে ভারত পানি ছেড়ে আমাদের দাবি নস্যাৎ করতে চায়।’

তিস্তা পাড়ের জেলে সবুর আলী বলেন, ‘তিস্তার জেগে ওঠা চড়ে ৩ বিঘা জমিতে রসুন ও পিয়াজ আবাদ করেছি। ভারত পানি ছাড়লে আমার ফসল ডুবে যাবে। এখন ফসল নিয়ে আশঙ্কায় আছি।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপ অপারেটর নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ভারত থেকে পানি ছেড়ে দেয়ায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ বেড়েছে। কত পানি আসবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’

তিস্তা নদীরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক ও বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘তিস্তার পানি বৃদ্ধির বিষয়টি শুনেছি। তবে আগামী ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তা পাড়ে ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’