আজ মঙ্গলবার রাত ১০:৪৫, ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
শাহনাজ আক্তার পারভীন ওরফে শানু সন্তানের অপেক্ষায় ভারসাম্যহীন। ১২ বছর ধরে পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছেন। তারও ছিলো একটি সুখের সংসার ও সোনালী অতীত। তার জীবনের গল্প একটি গভীর মানবিক সংকটের প্রতীক বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা পৌর শহরের নন্দীবাড়ীর মৃত আব্দুস সালাম ও আসমা বেগম দম্পতির মেয়ে শানু। ছোটবেলা থেকেই তার মেধা এবং আচরণ প্রতিবেশীদের মাঝে প্রশংসা কুড়িয়েছিলো। ২০০৬ সালে জেলার তারাকান্দায় বিয়ে দেওয়া হলে একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয় তাদের কোলে। কিন্তু এ সুখ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি বিয়ের দেড় বছর পরে তাদের বিচ্ছেদ হয়।
স্বামীর কাছে রেখে দেওয়া একমাত্র প্রিয় সন্তানের শুন্যতা তাকে ধীরে ধীরে মানসিকভাবে বিকারগ্রস্থ করে ফেলে। একটা সময় সন্তানের শোকে পাগল হয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে থাকেন। আর পরিবারের অর্থিক অসচ্ছলতা কারণে ভালো চিকিৎসা না পেয়ে শানুর মানসিক পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হতে থাকে। বাধ্য হয়ে পরিবারের লোকজন ঘরবন্দী করে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে শানুকে। এ অসহায় মেয়েটির ভাগ্যে কখনও জোটেনি সরকারি অনুদান বা সহায়তা।
প্রতিবেশীরা জানান, শানুর একটা ভাই দর্জির কাজ করে। পরিবারের আয়ের কোন উৎস নেই। ভাইয়ের সংসারে ৪ জন সদস্য। মানসিক ভারসাম্যহীন বোন ও মাকে সে লালন-পালন করে।
শানুকে শিকলে বেঁধে না রাখলে বিভিন্ন জায়গায় ছুটে যায়। তার মা মরে গেলে সেবা করার আর কেউ থাকবে না। তাদের ধারনা ভালো চিকিৎসা সেবা পেলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে শানু।
শানুর মা ষাটোর্ধ্ব আসমা বেগম ক্ষোভ নিয়ে বলেন, টাকার অভাবে মেয়েকে ভালো চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। সারাদিন মেয়ের পিছনে লেগে থাকতে হয়। আমি মরে গেলে কে দেখাশুনা করবে তাকে।
মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে তিনি আগে অবগত ছিলেন না। খোঁজখবর নিয়ে তাকে সরকারিভাবে সহায়তার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা জানান তিনি।